blogger widgets
শুভ্র ভাই এর লেখালেখির জগতে স্বাগতম! Welcome!

দ্বিতীয় স্বত্তা - দ্বিতীয় আইডি

ফেসবুক! বর্তমান পৃথিবীতে যদি ডিজিটাল সপ্তাচার্য নির্নয় করা হয় তবে অবশ্যই ফেসবুক প্রথম স্থান অধিকার করবে। আমার থেকে বছর দুয়েকের বড় মার্ক জ্যুকারবার্গ এমনই এক সামাজিক নেটওয়ার্ক আবিষ্কার করেছেন যা পুরো পৃথিবীকে খুব কাছে আনতে সমর্থ হয়েছে। মূহূর্তের মধ্যে দেশ বিদেশে বন্ধু, আত্মীয় পরিজনের সাথে আমরা নিজেদের মূহূর্তগুলো, অনুভূতিগুলো শেয়ার করতে পারছি। অন্যান্য আরো সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইট আছে। তবে তারা ফেসবুকের মত এত বিস্তৃতি, এত ব্যপ্তি অর্জন করতে সমর্থ হয়নি।


আমরা যারা দুইটি স্বত্ত্ব নিয়ে এই মাটির পৃথিবীতে বাস করছি, যারা এমন দেশে জন্মেছি যেখানে নিজের আসল আমিকে প্রকাশের সুযোগ নেই। মানবিক দিক থেকে সেই দ্বিতীয় স্বত্তা অগ্রহনযোগ্য না হলেও সামাজিক, ধর্মীয় এবং স্থানীয় আইনে সেটা অপরাধ বিধায় দ্বৈত স্বত্তাকে একক স্বত্তায় প্রকাশের সুযোগ থাকে না। নিজেকে মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হতে হয়। আমাদের সেই দ্বিতীয় স্বত্তার ক্ষমতা এতটাই বেশী যা নাকি ধর্ম, সমাজ, সংসার সব উচ্ছন্নে দিতে পারে। এই সমাজ সংসার পরিবারকে টিকিয়ে রাখতে তাই আমরা নিজেরাই লুকিয়ে থাকি।


দ্বৈত স্বত্তার মানুষগুলো যারা ফেসবুক ইউজ করে তাদের সবারই দুই বা ততোধিক ফেসবুক আইডি আছে। যার একটি থাকে আসল, অন্যটি ছদ্ম আইডি। ছদ্ম আইডিতে নিজের নাম থাকেনা। কাগজ সাহিত্যের যুগে কবিরা যেমন ছদ্মনামে লিখতেন এখনকার যুগে আমরা ছদ্মনামে ফেসবুক আইডি খুলি। প্রোফাইল পিকচারে গাছপালা, গরু ছাগল, ইন্দুর বিলাই, নায়কের, মডেলের ছবি দেই। যদিওবা নিজের ছবি দেই তবে হয় সেটা ব্যাক সাইড, অথবা মুখ ঢেকে কিংবা গলা কাটা ছবি। নিজের ছবি না দেয়া মানুষগুলো আবার অন্যের ছবি দেখার ব্যাপারে অধিক পরিমানে লালায়িত থাকে। আমারও একটি ফেক আইডি আছে। এই ফেক আইডি দিয়ে আমি রংধনু রঙের মানুষগুলোকে খুঁজতে আসিনি। আসি নিজের আমার আমিকে প্রকাশ করতে। মনের মাঝে আমার না বলা কথাগুলো ব্যক্ত করতে। যা আমি নিজের আসল আইডিতে প্রকাশ করতে পারিনা। আসল আইডিটি এতিমের মত পড়ে থাকে। যা বলার এই আইডিতে লিখি। রংধনু রঙের মানুষগুলোর জীবনের গল্প অনেকটা কাছাকাছি। নিজেকে লুকিয়ে রাখতে রাখতে অধৈর্য্য হওয়া, ভালোবাসা পাওয়ার আকুলতা, না পাওয়ার হতাশা, ভূল মানুষের সাথে পরিচিত হওয়ার হাহাকার। আমার জীবনেও এর ছিঁটেফোটা গল্প আছে। সেগুলোই আমি তোমাদের শুনিয়ে যাই। হয়তো তোমরা বিরক্ত হও। হয়তো তোমাদের মনে হয় আমি তোমার জীবনের কথাই লিখছি আমার মত করে।

-----------------------------------------------------------------