blogger widgets
শুভ্র ভাই এর লেখালেখির জগতে স্বাগতম! Welcome!

ডিজিটাল ফকির

শুভ্র মোটামুটি মোটা বুদ্ধির একটা ছেলে। ঢাকায় চাকরী করে। এসেছে খুলনা থেকে। ঢাকায় তার খুব চেনা কেউ নেই। বন্ধের দিনগুলোতে সে তাই একা একা ঢাকা শহরে ঘুরে বেড়ায়। আজ সে রমনা পার্কে ঘুরতে এসেছে। সে জানে এই পার্কে অনেক খারাপ ধরনের মানুষের যাতায়াত। তাই পকেটে শুধু গাড়ীভাড়ার টাকা নিয়ে মানিব্যাগ বাসায় রেখে এসেছে। চারপাশে প্রেমিক জুটিরা গায়ে গায়ে বসে গল্প করছে। একেক জনের হাত বিলীন হয়ে গেছে কোন অজানা দেশে। শুভ’র মনটা কেমন যেন করছে। খুব একা একা লাগছে। বুকটা ফাঁকা ফাঁকা লাগে। সে বেঞ্চ ছেড়ে উঠে পায়চারী করতে লাগলো। পার্কের উত্তর কর্নার অতিক্রম করার সময় দেখল এক ফকির টাইপের ড্রেস পরা একজন প্রস্রাব করছে। সে তাকাতে চায়নি। অন্যের পুরুষাঙ্গের দিকে তাকানো কবিরা গুনাহ। কিন্তু অজানা এক আকর্ষন তাকে আবার তাকাতে বাধ্য করল। সে অবাক হয়ে দেখল, ফকির বাবাজীর ডিক অনেক বড়। যাকে বলা যায় এক্সট্রা লার্জ। ফকির বাবা তার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছেন।

শুভ্র মোটামুটি  স্মার্ট ছেলে। সে লজ্জা ঝেড়ে ফেলে জিজ্ঞেস করলো, “ইয়াল্লা! তোমার নুনু এত বড় হল কিভাবে?”

ফকির উত্তর দিলো, “এটা খুবই সহজ একটা কাজ। আমি একজন ফকির মানুষ। আমাদের বাতেনি শক্তি থাকে। আমরা ইচ্ছা পুরন করতে পারি।”

শুভ্র, “ফকির বাবা, আমি তোমার দেখা পেয়েছি, তুমি কি আমার একটা ইচ্ছে পুরণ করবে।”
ফকির, “করব। কি তোমার ইচ্ছা বৎস?”

শুভ্র, “আমি চাই আমার পুরুষাঙ্গ তোমার মত এক্সট্রা লার্জ হোক।”
ফকির, “ব্যাপার না। খুবই সহজ কাজ। কিন্তু তোমাকে আমার সাথে সেক্স করতে হবে। আমি যখন তোমার সাথে সহবাস করব তখন তোমার মেশিন একটু একটু করে বাড়তে থাকবে। এটা দুই ফুট বড় হবে।”

শুভ্র ভয়ে চিৎকার করে উঠলো, “কখনো না। আমি ওই জিনিসের গুতো খেতে পারবো না। তুমি কখনোই এরকম আবদার করতে পারো না।”

ফকির, “আমি তো আর তোমাকে জোর করছি না। তোমার ইচ্ছে, তুমি চাইলে পুরন করতে পারো না চাইলে ত্যাগ করতে পারো। আমার তো তাতে লাভ ক্ষতি নেই।”

শুভ্র ভেবে দেখল, এতে সে অনেক ব্যাথা পাবে নিশ্চিত কিন্তু এটা তো সারা জীবনের সঞ্চয়। বউয়ের কাছে এই সাইজের অস্ত্র নিয়ে গর্ব করতে পারবে সারা জীবন। তাই সে একটু ঘাই ঘুই করার পর রাজী হয়ে গেলো।

ফকির বাবা শুভ্র কে ভাঁজ করে ফেলল। শুভ নিতে পারছিলো না। সে দাঁতে দাঁত চেপে প্রথম ধাক্কা সহ্য করলো। পাঁচ মিনিট কেটে গেলো। তারপর দশ মিনিট। বিশ মিনিট। এক পর্যায়ে শুভ্র আর নিতে পারছে না। সে ফকিরকে জিজ্ঞেস করলো, “খালাস হতে আর কতক্ষন লাগবে বাবা?”
ফকির উত্তর দিলো, “আমি ঠিক জানি না তুমি কতক্ষণ ফকির বাবার উপর বিশ্বাস রেখে এটা নিতে পারবে বাবা। জাস্ট চুপ করে থাকো। বিশ্বাসে মিলায় বস্ত।”

তোমরা ভাবছ শুভ্র বুঝি কোন ভন্ড প্রতারকের পাল্লায় পড়েছিলো? তাহলে কেন সে তার প্রোফাইলে লিখে রেখেছে, এক্সট্রা লার্জ, ছেলে তুমিও বলবে ওয়াও। 

স্বর্গলাভ

বেড়াতে যেতে কার না ভালো লাগে। বেড়ানোর কথা বললে আমি আনন্দে নেঁচে উঠি। বাঁধন হারা মন ভেসে যেতে চায় পাখির ডানায়। আমার তিন বন্ধু  নিশান, বিশ্বজিৎ এবং বাঁধন পূজোর ছুটিতে কক্সবাজার বেড়াতে গেল। আমিও যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পূজোর পরেই কুরবানীর ঈদ। তাই কক্সবাজার না গিয়ে খুলনায় গ্রামের বাড়ী আসতে হলো। খুব ইচ্ছে করছিলো সাগরের ঐ নীলাভ জলে গা ভাসিয়ে সাঁতার কাটতে। আমার জন্য ট্রেনের সিট রিজার্ভ করা ছিলো। টাকাটাই জলে গেলো। সাগরের জলে গেলেও ভালো লাগত। আমি ওদের ফোন করে দিলাম যাতে আর কাউকে নিয়ে নেয়। নিশান – বিশ্বজিৎ দুজনেই বিবাহিত। সিট আছে এক টা। দুই বউদি কে কিভাবে নেয়া যায়। বাঁধনের বয়ফ্রেন্ডকে নেয়া যায়। বাঁধন যে সমকামী এটা আমরা সবাই জানি। এটা আমরা সহজ ভাবেই মেনে নিয়েছি। বাঁধন যে ওর বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে হ্যাপী, আমাদের দিকে হাত বাড়ায়নি এটাই যথেষ্ঠ। আমরা মাঝে মাঝে বাঁধনকে ক্ষেপাই, কাছে আয় না দোস্ত, বেশী কষ্ট দেব না। মাত্র একবার। বাঁধন পারলে তো মারতে আসে।

তিনজন সাগরে গিয়ে মেতে উঠল উদ্দাম আনন্দে। বাঁধনহারা জীবন এক অন্যরকম মাদকতা এনে দেয়। কখন জোয়ার কখন ভাঁটা এটাই ওদের খেয়াল ছিলো না। সন্ধ্যার জোয়ারে ভেসে গেলো চারজন। আর ফেরা হলো না তাদের। একদম স্বর্গের দরজায়। মানুষ মরার পর সবাই কিন্তু স্বর্গের দিকে যায়। যাত্রা-সিনেমা দেখলে সবাই যেমন ভালো সিটে বসতে চায় । ভালো সীট না পেলে খারাপ সিটে বসতে হয়। সেরকম স্বর্গে ঢুকতে না পারলে নরক ছাড়া গতি হয় না। আগে গরুর গাড়ীতে করে স্বর্গের দরজায় পৌঁছাতে হত। পথে বেশ কয়েকদিন সময় নষ্ট হয়ে যেত। এখন ডিজিটাল যুগ। মর্ত টু স্বর্গ সুপার ফাস্ট ট্রেন সার্ভিস চালু হওয়ায় মৃত্যু হওয়ার সাথে সাথে স্বর্গের দরজায় পৌঁছে যাওয়া যায়। স্বর্গের মোবাইল নেটওয়ার্ক ভালোই। কোথায় কি হচ্ছে তা পৃথিবীতে বসে নিমিশেই জানা যাচ্ছে। শুনছি কয়েকদিন পরেই নাকি টেলিভিশনে ব্রম্মার ডাংগুলি খেলা সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। তারা চারজন স্বর্গদ্বারে পৌঁছে দেখল প্রহরী দাঁড়িয়ে আছেন। প্রহরীকে বেল দেয়ার সময় আছে। তারা স্বর্গে ঢুকে যাওয়ার উপক্রম হলো। মেঘনিনাদে চিৎকার করে উঠল প্রহরী, কুকুর হইতে সাবধানতারা ভয় পেয়ে থমকে দাঁড়ালো। বাঙালী বলে কথাবাই বর্ন ভিতুর ডিম। গেট পাহারা দেয়ার জন্য ইয়া বড় বড় কুকুর বাঁধা।  সেই কুকুরের কাছে বসুমতির বুলডগ তেলাপোকার সমান। ভাগ্যিস কুকুরগুলো লোহার শিকলে বাঁধা। শিকল টা লোহার না সোনার তাই নিয়ে নিশান আর বিশ্ব আলোচনা শুরু করে দিলো। নিশান মাথা নেড়ে বলতে লাগলো অবশ্যই এটা সোনার। স্বর্গে সোনা অনেক সস্তা।

প্রহরী পান চিবুতে চিবুতে তাদের পরিচয় নিলো। স্বর্গে তো আর মৃত্যু বলে কিছু নেই।  প্রহরীটা বড্ড সেকেলে। পান কেউ খায় নাকি এখন। হাতে একটা ব্রান্ডির বোতল থাকলে মানাতো। সে তাদের রেকর্ড দেখে নিলো বেশ মনযোগ দিয়ে। তারপ্র চোখ তুলে তাকালো। প্রথমে নজরে এল বিশ্বজিৎ।

-     বাবা বিশ্বজিৎ, তোমার রেকর্ড তো ভালো। কিন্তু তুমি বড্ড লোভী। সারাজীবন টাকা পয়সার লোভ তোমার। ঈশ্বরের চিন্তা ভাবনা করো নাই। বেশী সম্পদের আশায় লক্ষী নামের মেয়েকে বিয়ে করেছ। বঊয়ের ভাগ্যে নিজের ভাগ্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার লোভ ছিলো তোমার। না বাপু, তোমাকে আমি স্বর্গে ঢুকতে দিতে পারিনা। তুমি নরকে গিয়ে দেখ সিট খালি আছে কিনা। না থাকলে তোমাকে পুনর্জন্ম নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে যেতে হবে।
এবার প্রহরীমশাই নিশানের থলথলে দেহের দিকে তাকিয়ে বললেন।
-     নিশান চট্টোপাধ্যায়, তোমার রেকর্ড ভালো। ঈশ্বরের নাম তুমি ভালোই নিয়েছ। কিন্তু তুমি বড় পেটুক। খাওয়া দাওয়া নিয়ে এত ব্যস্ত ছিলে যে তোমার মানব জন্মটাই বৃথা। আবার বিয়ে করেছ মিষ্টি নামের মেয়েকে। বউ তোমার মিষ্টি ছিলো? তোমাকে বাপু স্বর্গে আমি ঢুকতে দেবনা। এমনিতেই স্বর্গের জনসংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেছে। তোমাকে স্বর্গে ঢোকালে এখানে খাদ্যসংকট দেখা দেবে। তোমার নরকেও গিয়ে কাজ নেই। তুমি বরং ডাইরেক্ট মর্তে ফিরে যাও।
ব্যাপার স্যাপার দেখে বাঁধনের বয়ফ্রেন্ড তার কানে ফিসফিস করে বলল,
-     ব্যাপার তো খুব সুবিধার বলে মনে হচ্ছে না। তোমার নামে তো আবার ধোন আছে। আমাদের কি আর স্বর্গলাভ সম্ভব হবেনা!



(এই পর্বটি কেমন লাগলো বন্ধু। আরো পড়তে চাও)