blogger widgets
শুভ্র ভাই এর লেখালেখির জগতে স্বাগতম! Welcome!

কপাল খারাপ

বান্দরবনের পার্বত্য এলাকা সবুজ বনানীর বুকে আঁকাবাকা কালো একটা রেখা কাছে গেলে দেখা যাবে বনের বুক চিরে চলে যাওয়া পিচ ঢালা রাস্তা এটা দুপাশের গাছগুলো বড় হতে হতে আকাশ ছুঁয়েছে যেন রাস্তার ঢালু দিক থেকে একটা জিপ আসার শব্দ পাওয়া গেল বনের পাখিরা ডানা ঝাপটে উড়ে গিয়ে দূরের গাছে গিয়ে বসল জিপের হুইল ঘোরাচ্ছে আর মনের সুখে শিস দিচ্ছে চালক আজ একটা ফিনফিনে বাতাস বইছে তাই মেজাজটাও ফুরফুরে আছে চালকের আসনে বসা শুভ্র, ২৫ বছরের যুবা পুলিশের সাব ইন্সপেক্টরের চাকরী নিয়ে এসেছে এখানে আজ মাস হল প্রথম প্রথম খুব খারাপ লাগত মনে হত সে পাগল হয়ে যাবে একসময় সে পাহাড়ী বাঙালীদের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে ভালই আছে মারমাদের বানানো মদটা সে বেশ উপভোগ করে

গাড়ী চালাতে চালাতে একটা জিনিস তার নজরে এল রাস্তা থেকে নেমে গিয়ে কিছুটা ভিতরে একটা মানুষ গাছ জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে কান্নার শব্দ আসছে পুরুষ মানুষ কাঁদবে কেন শুভ্র আগ্রহ হল সে গাড়ীটাকে বামপাশে সাইড করে দাঁড় করাল সে লোকটার দিকে এগিয়ে গেল বুট জুতোর নিচে শুকনো পাতারা মচমচ করে ভেঙে যেতে লাগল একটা পাহাড়ী যুবক, তার বয়সীসম্পূর্ণ দিগম্বর করে ইউক্যালিপটাস গাছের সাথে কে যেন বেঁধে রেখেছেএই এলাকার চাকমা ছেলেগুলোর গড়ন বেশ চমৎকার সিন কোডীর পর্ন মুভিতে দেখা অনেক স্টারের সাথে মিলে যায় এই ছেলেটার দেহ সুগঠিত গায়ের রঙ সোনালী হলুদ মাথায় ফিনফিনে মোঙ্গলীয় ধাঁচের চুল শুভ্র বুকের বামপাশে কেমন একটা শিরশির ভাব অনুভব করল সে পুলিশ অফিসার জেরা করতেই হয়

ছেলেটা কাঁদতে কাঁদতে জবাব দিল চাকমাদের বাংলা উচ্চারণে একটা টান থাকে শুভ্র কাছে বেশ চমৎকার লাগে এই টানটা যেমন সে উপভোগ করে শ্রীকান্তের গাওয়া রবীন্দ্র সংগীত মন কেমন কেমন করা দিনগুলোতে ইন্দ্রাণী-শ্রীকান্তের গাওয়া রবীন্দ্র সংগীতগুলো তাকে সঙ্গ দেয় ছেলেটার নাম সজিব চাকমা ফরেষ্ট অফিসের জিপ চালায়

-      আজ আমার কপালটাই খারাপ সকালে বউয়ের সাথে ঝগড়া হল রাগ করে বাড়ী থেকে বেড়িয়ে পড়লাম গাড়ী চালাতে চালাতে গহীন বনে চলে এসেছি পথে একজন ক্লান্ত লোক সাহায্য চাইলপরনে ছেড়া খোঁড়া কাপড় কি মনে করে রাজী হলাম এখানে আসার পর, হারামীটা আমার কাঁধে পিস্তল ধরল আমার জিপ ছিনিয়ে নিয়ে গেল আমার কপালটাই খারাপ আমার কাপড় পর্যন্ত খুলে নি্ল কাপড় নিবি নে আমাকে এই গাছে বেঁধে রেখে গেল এখন দুপুর গড়িয়ে হয়ে গেছে ভাবছিলাম আমি না খেয়ে শুকিয়ে মরে যাব এই গাছের সাথে আমার কঙ্কাল শুধু বাঁধা থাকবে কপালটাই খারাপ


শুভ্র কিছু বলল না সে চাকমা যুবকের চোখে চোখ রাখল তার হাতের আংগুল প্যান্টের জিপার খুলতে লাগল সজীব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল কি করছেন শুভ্র ঠোঁটে বাঁকা হাসি সে মৃদু হেসেই জবাব দিল তোমার কপালটা আজ আসলেই খারাপ

সন্যাসী

রাঙামাটির পথ পেরিয়ে কাপ্তাইয়ের জল ডিঙিয়ে সুদুর পাহাড়ের টিলায় প্রকৃতি কোলে শান্ত সুনিবিড় পরিবেশে দাঁড়িয়ে আছে এই বিহারটি। বিহারে আজ নতুন সাধুর পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। চব্য চোষ্য লেহ্য পেয় কাম মায়া অর্থাৎ জীবনের মায়া ছলনা কাটিয়ে এই জীবনে আসা খুবই কঠিন কাজ। কেউ যদি সন্যাসব্রত গ্রহন করে আবার গৃহী জীবনে ফিরে না যায় সেজন্য কঠিন সব পরীক্ষার মধ্য দিয়ে সাধু নির্বাচন করা হয়। মাত্র তিনজন প্রার্থী সব গুলো পরীক্ষায় পাশ করতে পেরেছে। বাকী আছে মাত্র একটি পরীক্ষা। আত্ম-সংযম পরীক্ষা। সাধুদের জন্য সহজ কিন্তু গৃহীদের জন্য কঠিন। প্রার্থীদের তিনজনের একজন পাহাড়ী। অনিরুদ্ধ চাকমা। সে এসেছে খাগড়া ছড়ির দীঘিনালা উপজেলা থেকে। মঙ্গোলীয় বা ভোটচীনিয় বংশোদ্ভুত অনিরুদ্ধের চেহারায় আকর্ষণীয় একটা কোমল ভাব রয়েছে। আর চাকমাওরা এমনিতেই আঙ্গুরের মত ফরসা।  একজন এসেছে চট্রগ্রামের রাউজান থেকে। কেনেডি কর্মকার। নাম শুনলে ফরেনার মনে হয়, কিন্তু চেহারায় পুরা দ্রাবিড়ীয় প্রকাশ। শেষের জন এসেছে দক্ষিণবঙ্গের কোন এক জেলা থেকে। নাম শুভ্র বড়ুয়া। চেহারা মন্দ না, কিন্তু চোখের চাহনিতে একটা ভোদাই ভাব আছে। সাধুদের দিকে কেমন একটা ভোদাই মার্কা ভ্যাবলা চাহনীতে তাকাচ্ছে।

বিহারের হেড সাধুকে বলা হয় বন ভান্ত। বন ভান্ত মানে হচ্ছে বড় সাধু। বন ভান্ত এই তিন নতুন ভান্ত বা সাধুর লাস্ট এক্সাম নিবেন। প্রার্থী তিনজনকে একটি বেঞ্চের উপর সারি দিয়ে বসিয়ে দেয়া হলো। তাদের পুরুষাঙ্গে একটা করে ছোট ঘন্টা বেঁধে দেয়া হলো। কোন রকম নাড়াচড়া হলেই টং করে শব্দ হবে। তাদের সামনে বাংলা সিনেমার এক প্রখ্যাত নায়িকা শাবনুর কে আনা হলো। তিনি ড্যান্স করবেন। শাবনুর একগাদা বোরখা পরে এসেছেন। তাকে ময়ুরী আপুর মত স্বাস্থ্যবতী লাগছে আজ। তিনি অত ধার্মিক হয়ে গেলেন কেন বোঝা যাচ্ছে না।

শাবনুর নাচ শুরু করলেন। একে একে সে সবগুলো বোরখা খুলে ফেলল, এখন সালোয়ার কামিজ পরে নাচছেন। এমন সময়ে কেনেডির ঘন্টা টং করে বেজে উঠলো। বন ভান্ত বললেন, “বাবা তুমি আমাকে হতাশ করলে। সত্যি বলতে কি নিজের উপর তোমার কোন কন্ট্রোলই নেই। পাশের রুমে যাও। হিম ঠান্ডা জলের ব্যবস্থা আছে। বস্ত্র পরিত্যাগ পূর্বক জলে বসে ব্যর্থতার নিয়ে চিন্তা ভাবনা করো।”

শাবনুর নেচেই চলেছেন। এক পর্যায়ে সে আরো কয়েক প্রস্থ কাপড় খুলে ফেলে শুধু ব্রা আর প্যান্টি পরে নাচছেন। আজকালকার সিনেমায় যা পরে নাচেন আরকি। অনিরুদ্ধ’র ঘন্টা টং করে উঠলো। বনভান্ত আবার একই কথা বললেন, “বাবা তুমি আমাকে হতাশ করলে। সত্যি বলতে কি নিজের উপর তোমার কোন কন্ট্রোলই নেই। পাশের রুমে যাও। হিম ঠান্ডা জলের ব্যবস্থা আছে। বস্ত্র পরিত্যাগ পূর্বক আগের প্রার্থীর সাথে জলে বসে ব্যর্থতার নিয়ে চিন্তা ভাবনা করো।”

এদিকে শুভ্র;র কোন নড়াচড়া নেই। তার সামনে একজন মানবী নেচেই চলেছে, অথচ কোন বিকার নেই। শাবনুরের ইগোতে লাগলো। সে শরীরের শেষ সুতোটুকু ছূড়ে ফেলে নাচতে লাগলো। বন ভান্ত , শুভ্র দুজনেই শাবনুরের দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু কারো চোখে কামনার আগুন নেই। বন ভান্ত বললেন, “বাবা আমি তোমার আত্ম-সংযমে খুশী হয়েছি, তুমি এই পরীক্ষায় সফলতার সাথে পাশ করেছ। একজন প্রকৃত সাধু হওয়ার সব গুন তোমার আছে। কাম কে যে জয় করতে পারে সেই তো বুদ্ধ, সেই জ্ঞানী। তুমি পাশের রুমে গিয়ে তাদের সাথে বস্ত্র পরিত্যাগ পুর্বক ঠান্ডা জলে স্নান করো। তোমাকে দেখে বাকী দুজন শিখুক কিভাবে আত্ন-সংযম করতে হয়।”

এবার শুভ্র’র ঘন্টাটা টং করে বেজে উঠলো। বন ভান্ত অবাক হয়ে শুভ্র’র দিকে তাকালেন।