বান্দরবনের পার্বত্য এলাকা। সবুজ বনানীর বুকে আঁকাবাকা কালো একটা
রেখা। কাছে গেলে দেখা
যাবে বনের
বুক চিরে
চলে যাওয়া
পিচ ঢালা
রাস্তা এটা। দুপাশের গাছগুলো বড় হতে হতে আকাশ
ছুঁয়েছে যেন। রাস্তার ঢালু দিক থেকে
একটা জিপ
আসার শব্দ
পাওয়া গেল। বনের পাখিরা ডানা ঝাপটে
উড়ে গিয়ে
দূরের গাছে
গিয়ে বসল। জিপের হুইল ঘোরাচ্ছে আর
মনের সুখে
শিস দিচ্ছে চালক। আজ একটা ফিনফিনে বাতাস বইছে। তাই মেজাজটাও ফুরফুরে আছে। চালকের আসনে বসা শুভ্র, ২৫ বছরের যুবা। পুলিশের সাব ইন্সপেক্টরের চাকরী নিয়ে
এসেছে এখানে
আজ ৬ মাস হল। প্রথম প্রথম খুব খারাপ
লাগত। মনে হত সে পাগল হয়ে
যাবে। একসময় সে পাহাড়ী বাঙালীদের সাথে
নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। ভালই আছে। মারমাদের বানানো মদটা
সে বেশ
উপভোগ করে।
গাড়ী চালাতে চালাতে একটা জিনিস
তার নজরে
এল। রাস্তা থেকে নেমে
গিয়ে কিছুটা ভিতরে একটা
মানুষ গাছ
জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কান্নার শব্দ আসছে। পুরুষ মানুষ কাঁদবে কেন। শুভ্র’র আগ্রহ
হল। সে গাড়ীটাকে বামপাশে সাইড করে
দাঁড় করাল। সে লোকটার দিকে এগিয়ে
গেল। বুট জুতোর নিচে
শুকনো পাতারা মচমচ করে
ভেঙে যেতে
লাগল। একটা পাহাড়ী যুবক, তার বয়সী – সম্পূর্ণ দিগম্বর করে ইউক্যালিপটাস গাছের সাথে
কে যেন
বেঁধে রেখেছে।এই এলাকার চাকমা
ছেলেগুলোর গড়ন
বেশ চমৎকার। সিন কোডীর
পর্ন মুভিতে দেখা অনেক
স্টারের সাথে
মিলে যায়। এই ছেলেটার দেহ সুগঠিত। গায়ের রঙ
সোনালী হলুদ। মাথায় ফিনফিনে মোঙ্গলীয় ধাঁচের চুল। শুভ্র বুকের বামপাশে কেমন একটা
শিরশির ভাব
অনুভব করল। সে পুলিশ অফিসার জেরা
করতেই হয়।
ছেলেটা কাঁদতে কাঁদতে জবাব দিল। চাকমাদের বাংলা উচ্চারণে একটা
টান থাকে। শুভ্র’র কাছে
বেশ চমৎকার লাগে এই
টানটা। যেমন সে উপভোগ করে শ্রীকান্তের গাওয়া রবীন্দ্র সংগীত। মন কেমন কেমন
করা দিনগুলোতে ইন্দ্রাণী-শ্রীকান্তের
গাওয়া রবীন্দ্র সংগীতগুলো তাকে
সঙ্গ দেয়। ছেলেটার নাম সজিব চাকমা। ফরেষ্ট অফিসের জিপ চালায়।
-
আজ আমার কপালটাই খারাপ। সকালে বউয়ের সাথে
ঝগড়া হল। রাগ করে বাড়ী থেকে
বেড়িয়ে পড়লাম। গাড়ী চালাতে চালাতে গহীন
বনে চলে
এসেছি। পথে একজন ক্লান্ত লোক সাহায্য চাইল।পরনে ছেড়া খোঁড়া কাপড়। কি মনে করে রাজী
হলাম। এখানে আসার পর, হারামীটা আমার
কাঁধে পিস্তল ধরল। আমার জিপ ছিনিয়ে নিয়ে গেল। আমার কপালটাই খারাপ। আমার কাপড় পর্যন্ত খুলে নি্ল। কাপড় নিবি নে। আমাকে এই
গাছে বেঁধে
রেখে গেল। এখন দুপুর গড়িয়ে হয়ে
গেছে। ভাবছিলাম আমি না
খেয়ে শুকিয়ে মরে যাব। এই গাছের সাথে আমার
কঙ্কাল শুধু
বাঁধা থাকবে। কপালটাই খারাপ।
শুভ্র কিছু বলল না। সে চাকমা যুবকের চোখে
চোখ রাখল। তার হাতের আংগুল প্যান্টের জিপার খুলতে
লাগল। সজীব অবাক হয়ে
জিজ্ঞেস করল
কি করছেন। শুভ্র’র ঠোঁটে
বাঁকা হাসি। সে মৃদু হেসেই জবাব
দিল তোমার
কপালটা আজ
আসলেই খারাপ।
0 টি মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন